✅হিমসাগর আমের পরিচিতি:
আমরা সকলেই জানি আম কে ফলের রাজা বলা হয়। তবে এই আমেরও একটি রাজা আছে আর তা হচ্ছে হিমসাগর। হিমসাগর আম একটি জনপ্রিয় আমের জাত ,যার উৎপত্তি আধুনিক বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। সর্বোত্তম আম হিসেবে বিবেচিত হিমসাগরের ভেতরের অংশ হলুদ থেকে কমলা রঙের এবং এতে কোনো ফাইবার নেই। ফলটি মাঝারি আকারের এবং এর ওজন ২২০ থেকে ৩৫০ গ্রামের মধ্যে, মানে এক কেজি হয়তে ৪/৫ টি আম প্রয়োজন। এছাড়া বাংলাদেশের মেহেরপুর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সাতক্ষীরা জেলাতেও এই আমের চাষ হয়।
☑️হিমসাগর আম চিনার উপায় :
হিমসাগর আম মাঝারি আকৃতির লম্বা এবং আনেকটাই গোলাকার। আমটির আঁশ নেই, এই আমটি অনেক স্বাদযুক্ত ও সু-মিষ্ট। মে মাসের শেষের সপ্তাহ থেকে অথাৎ জৈষ্ঠ মাসের দ্বিতীয় পর থেকে পাঁকতে শুরু করে এই আম।
☑️হিমসাগর পাকা আম এর বৈশিষ্ট্যঃ
হিমসাগর পাকা আমটা খেতে যে অসাধারন মিষ্টি স্বাদ আর অন্য কোনো আমে নেই। পাকা আমের ভিতরের রং হলুদ ও আমের বাইরের রং সবুজ হয়ে থাকে। গোপালভোগ আম পাকলেও বাইরের খোসা পুরোপুরি ভাবে হলুদ বা কমলা রং হয় না আমের আটি পাতলা,খোসা মোটা ও আঁশ নেই। হিমসাগর আম খেতে কড়ামিষ্টি , সুঘ্রাণযুক্ত ও খুব সুস্বাদ ।
☑️ হিমসাগর পাকা আমের পুষ্টিগু:
একটি আমে যে পরিমান পুষ্টিগত মান পাওয়া যায় তা একজন মানুষকে সুস্থ রাখতে এবং পুষ্টিগত মানের অভাব পূরণে বিশেষ ভাবে ভূমিকা রাখে।
☑️হিমসাগর আমের উপকারিতা:
✅হজমশক্তি বৃদ্ধি : আমে থাকা পেকটিন হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। আমে রয়েছে বেশ কয়েক প্রকার অ্যানজাইম, তা হজমপ্রক্রিয়া ভালো রাখতে সাহায্য করে।
✅মনযোগ ও স্মৃতির জন্য: কোনও কিছুর প্রতি মনযোগ ধরে রাখতে কষ্ট হলে উপকার করবে আম। মেমোরি বুস্টার হিসেবেও কাজ করে ফলটি।
✅প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: আমে থাকে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ২৫ প্রকারের কেরোটেনয়েডস, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকায় আম ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে। আমে রয়েছে ফোলেট, ভিটামিন কে, ভিটামিন ই ও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন বি, যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
✅মুখের ও নাকের সমস্যা দূর করতে: পাকা আম মুখের ও নাকের উপর জন্মানো ব্ল্যাকহেড দূর করতে অনেকাংশে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রতিদিন ৩০০ গ্রাম পাকা আম খান তাহলে আপনার মুখের কালো দাগ দূর হবে।
✅চোখের জন্য উপকারী আম : আম ভিটামিন এ-তে ভরপুর। এক ফালি আম আপনার শরীরের দৈনিক ভিটামিন এ-এর চাহিদার ২৫ শতাংশ পূরণ করে। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে আম, এ ছাড়া রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে আম।
✅রক্ত উৎপাদনে সহায়তা: আম দেহে নতুন রক্ত তৈরি করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ড্রাই আই সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা আম খেয়ে উপকার পেতে পারেন।
✅ ত্বক ভালো রাখে: আমের পুষ্টি উপাদানগুলো ত্বকের জন্য খুবই ভালো। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি। এটি ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খুবই কার্যকর। এ ছাড়া বয়সের ছাপ রোধ করতে পারে আম।
✅ গর্ভাবস্থায় শিশুর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে: গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদানে ভরপুর আম। এর মধ্যে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-সিক্স আর ফোলেট আছে
✅ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়: সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দিনের খাদ্যতালিকায় আম রাখলে কিছু ক্যানসারের বিরুদ্ধে তা একটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলোর প্রদাহরোধী ক্ষমতার জন্যই তা সম্ভবপর হয়
✅অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের খনি: আমে আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। আর এসব অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে বাঁচায়। তাই সাধারণভাবে নীরোগ আর সবল থাকে দেহ।
✅হৃদযন্ত্র ভালো রাখে : আম পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ভালো উৎস। এটি হৃৎস্পন্দন ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ ভালো রাখতে উপকারী।
✅কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ : আমে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি, পেকটিন ও আঁশ রয়েছে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাজা আম পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ, এটি শরীরের কোষ ও পানির চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখে। হৃৎস্পন্দন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও আম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
✅অ্যাজমা প্রতিরোধে সহায়ক : বেশ কিছু গবেষণা-নিবন্ধে বলা হয়েছে, আমে থাকা ভিটামিন এ ও বেটা ক্যারোটিন শিশুদের অ্যাজমা প্রতিরোধ সহায়ক। যদিও এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
✅অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ : আম টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড ও সিটরিক অ্যাসিডে ভরপুর। এটি শরীরে অ্যালকালির পরিমাণ সমুন্নত রেখে অ্যাসিডিটি কমায়। অ্যাসিডের ক্ষতিকর প্রভাব কমাতেও সাহায্য করে আম।
👉 মৌসুমি ফল আমের রয়েছে ব্যাপক খ্যাতি। এটি যেমন সুস্বাদু, তেমনি এটি খেয়ে রোগবালাই থেকেও দূরে থাকা সম্ভব। অতএব আম খান, স্বাস্থ্য ভালো রাখুন।
Reviews
There are no reviews yet.